স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

স্বাস্থ্যসেবা

স্বাস্থ্যসেবা বলতে রোগ, অসুস্থতা, আঘাত এবং অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক বৈকল্য প্রতিরোধ, নির্ণয়, চিকিৎসা, নিরাময় ও আরোগ্যলাভ করার মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষণাবেক্ষণ বা উন্নত করাকে বোঝানো হয়। স্বাস্থ্য পেশাজীবী এবং স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের পেশাদার ব্যক্তিরা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের মধ্যে চিকিৎসক ও চিকিৎসকের সহযোগী ছাড়াও দন্তচিকিৎসা, ঔষধ প্রস্তুতি ও ব্যবহার বিজ্ঞান, ধাত্রীবিজ্ঞান, শুশ্রুষাবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, চক্ষুমিতি, শ্রুতিবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, কর্মস্থলীয় চিকিৎসা, অঙ্গসঞ্চালন চিকিৎসা, মল্লক্রীড়া প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য আরও অনেক ক্ষেত্রের স্বাস্থ্য পেশাজীবীরা একত্রে স্বাস্থ্যসেবার খাতটি গঠন করেছে। স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে প্রাথমিক সেবা, দ্বিতীয় পর্যায়ের সেবা এবং তৃতীয় পর্যায়ের সেবা ছাড়াও জনস্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্ত।

দেশ, সম্প্রদায়, লোকালয় ও ব্যক্তিভেদে স্বাস্থ্যসেবার লভ্যতা ভিন্ন হয়ে থাকে, যা আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্যনীতিসমূহ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা বলতে “সম্ভাব্য সর্বোত্তম স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ফলাফল অর্জনের জন্য ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসেবার সময়ানুগ ব্যবহারকে বোঝায়”। স্বাস্থ্যসেবার লভ্যতার উপরে যে সমস্ত প্রভাবক কাজ করে থাকে তাদের মধ্যে রয়েছে আর্থিক সীমাবদ্ধতা (যেমন স্বাস্থ্যবীমার পরিধি), ভৌগোলিক প্রতিবন্ধকতা (যেমন অতিরিক্ত পরিবহন খরচ, স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য কাজ থেকে বেতনযুক্ত ছুটি পাবার সম্ভাবনা) এবং ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা (স্বাস্থ্যসেবা প্রদায়কদের সাথে যোগাযোগে অক্ষমতা, স্বাস্থ্যশিক্ষার অভাব, নিম্ন আয়)। স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতাগুলি চিকিৎসা সেবার ব্যবহার, চিকিৎসার কার্যকারিতা ও সামগ্রিক ফলাফলের (সুস্থতা, মৃত্যুহার) উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা বা স্বাস্থ্যব্যবস্থা বলতে কোনও নির্দিষ্ট জনসমষ্টির স্বাস্থ্য চাহিদা মেটানোর জন্য প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলির সমষ্টিকে বোঝানো হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একটি সঠিকভাবে কার্যরত স্বাস্থ্যব্যবস্থাতে যে উপাদানগুলি থাকা আবশ্যক, সেগুলি হল: অর্থায়ন পদ্ধতি, সুপ্রশিক্ষিত ও যথেষ্ট পরিমাণে বেতনপ্রাপ্ত শ্রমশক্তি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নীতি নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্ভরযোগ্য তথ্য, এবং সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণাধীন স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহ যেগুলিতে মানসম্মত ঔষধ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবন্দোবস্ত আছে।

একটি দক্ষ স্বাস্থ্যব্যবস্থা কোনও দেশের অর্থনীতি, উন্নয়ন ও শিল্পায়ন প্রক্রিয়াতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। বিশ্বব্যাপী মানুষদের সাধারণ শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের পেছনে শক্তি হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। স্বাস্থ্যসেবার ইচ্ছাকৃত হস্তক্ষেপমূলক প্রয়োগের মাধ্যমে ১৯৮০ সালে জলবসন্ত রোগকে মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম রোগ হিসেবে চিরতরে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল। তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments