পরিবেশ ও জলবায়ুবুলেটিন নিউজ

সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ বিপর্যয় ও সামাজিক অভিঘাত” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সিলেট-এর উদ্যোগে আজ ১২ জানুয়ারি (রবিবার) বিকাল ৪:৩০ টায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সম্মেলন কক্ষে “সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ বিপর্যয় ও সামাজিক অভিঘাত” শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ধরা- সিলেটের আহ্বায়ক ড. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ।

আলোচনা সভায় এতে সম্মানোনীয় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ধরা’র সম্মানিত আহবায়ক রাশেদা কে. চৌধুরী, ধরা’র উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন ধরা’র কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল। সভাটি সঞ্চালনা করেন ধরা সিলেটের সদস্য সচিব আব্দুল করিম কিম।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক। আরো বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট ভ্রমণ লেখক মঈনুস সুলতান, শাহজালাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সাবেক ডিন অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডঃ কামাল আহমেদ চৌধুরী, সাথে একটু পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড: নাজিয়া চৌধুরী ও সমাজকর্ম বিভাগের প্রফেসর ডঃ আলি ওয়াক্কাস, একদম বলতে পারি যে দৈনিক সিলেটের ডাকের ভিজিটিং এডিটর নজরুল ইসলাম বাসন, মানবাধিকার কর্মী ফাদার জোসেফ গোমেজ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মোঃ ফেরদৌস আনোয়ার, সিলেট জেলা সমাজসেবা দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুর রফিক, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের আব্দুল হাই আল হাদী, পাত্র সমাজ কল্যাণ পরিষদ (পাসকপ) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ পাত্র প্রমুখ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ বলেন, পরিবেশ অবক্ষয় দেশব্যাপী এখন চরম বিপর্যয় ডেকে এনেছে। যেভাবে নদ-নদী, বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে নির্ঘাত পরিবেশ সংরক্ষণে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সময় এসেছে। যে দেশের তরুণ সমাজ দীর্ঘ অন্যায়ের বিরুদ্ধে, যারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছে সেই তরুণদের পরিবেশ ও মানবাধিকার সুরক্ষায় ঐক্যবদ্ধ করে আরেকটি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। রাষ্ট্র ও প্রশাসনকে জনমানুষের কাতারে এসে দেশ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আর তা না হলে এই মহাধ্বংস থামবে না।

সম্মানোনীয় অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী বলেন, পরিবেশ সবার বিষয় আর একটাই পৃথিবী। সবচেয়ে শক্তিশালী দেশও আজকে একটি দাবানল নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা। পরিবেশ সমুন্নত না রাখলে আমরা সবাই বিপর্যয়ের মুখে পড়বো। প্রথমে পরিবেশের অবক্ষয় করতে দিয়ে তারপর তা থেকে মুক্তির চেষ্টা করা মোটেও কাম‍্য নয়। পরিবেশ এত গুরুত্বপূর্ণ যে এর সংরক্ষণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

বিশেষ অতিথির আলোচনায় ধরা’র আহ্বায়ক রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় একদিকে প্রয়োজন সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা আর অপরদিকে যারা পরিবেশ ধ্বংস করে তাদেরকে চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা।

ধরা’র উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে সবচেয়ে বেশি কাজ করতে পারেন প্রশাসন। শহরের যানজট দূর করার জন্য প্রশাসন নগর পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে পারেন। পরিবেশ কর্মীদের সহায়তায় প্রশাসন এগিয়ে আসলেই এগুলো উন্নীত করা সম্ভব।

ধরা’র কেন্দ্রিয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল তার মূল বক্তব‍্যে হাওর, টিলা, পাহাড় ও বনাঞ্চল বেষ্টিত সিলেটের ভূ-প্রাকৃতিক অনন‍্য বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে চলমান ব‍্যাপক পরিবেশ বিপর্যয়ের চিত্র এবং সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর গভীর বিরূপ প্রভাবের বাস্তবতা তুলে ধরেন। তার বক্তব্যে অন‍্যান‍্য দাবির পাশাপাশি অবিলম্বে বেপরোয়া পাথর ও বালি উত্তোলন, নদী দূষণ, বনাঞ্চল ধ্বংস এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার লংঘন বন্ধের জোর দাবি জানান।

আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তাগণ সিলেটের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments