শুরু হলো লালন স্মরণোৎসব-২০২৪
[ঢাকা] ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ [বুলেটিন নিউজ ২৪.কম] : গানে গানে গুরু বন্দনা, তত্ত্ব ও পদ পরিবেশনে মহাত্মা লালন সাঁইজিকে স্মরণের মধ্যদিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৩ দিনব্যাপী আয়োজন।
আজ ১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে “আশাসিন্ধু তীরে’’ শীর্ষক ১ম দিনের আয়োজন উদ্বোধন করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান।
উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ বলেন “১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ বিভাজিত হলে ঠিক তারপরেই আমরা দেখলাম ভাষা সুফি লালন ধারা বিকাশ হতে দেয়া হয় নাই, পশ্চিমবঙ্গ যেমন এদেশের ইসলাম সত্তা, মুসলিম সত্তা বোঝেনি ঠিক তেমনই পরবর্তীতে পশ্চিম পাকিস্তানও বুঝেনি বাঙালি সত্তা। সে কারণেই আমাদের যুদ্ধ করতে হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “এ ধরনের অনুষ্ঠান আরো অনেক হতে হবে, নানা রকমের কর্মসূচি নিতে হবে, মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে আর নতুন করে দেশ গড়ার যে সুযোগ আমরা পেয়েছি সেই সাহস যেন আমাদের থাকে, যে সাহসে শত শত শিশু মৃত্যু বরণ করল।”
আমরা ৫ আগস্টের আগের ভণ্ডামি মিথ্যাচারে যেন ফিরে না যাই উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন “নতুন জন্মানোর জায়গায় শিল্পকলাকে আমরা দেখতে চাই, শিল্পকলায় যে নতুন নেতৃত্ব আমরা পেয়েছি তা অনেক গভীরে বিকাশ ঘটাতে পারবে বলে আশা করি।”
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ উপস্থিত সকল দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক এক অভ্যুত্থান উত্তর সময়ে লালন ফকির সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস নতুন কিছু তাৎপর্য বহন করে।”
তিনি বলেন, “এক রৈখিক জাতীয়তাবাদের ফ্যাসিবাদ থেকে ভাবগত মুক্তির বিভিন্ন চিহ্ন আমরা লালন থেকে পেতে পারি। জাতিভেদ পন্থার বিপরীতে লালন সাঁইজির সাধনার উপায় ছিল শিল্পকলা, শ্রেনী কেন্দ্রিক রাজনীতির বাইরে আমাদের নতুন রাজনীতি বন্দোবস্তের দার্শনিক ভিত্তি দিতে সক্ষম লালন সাঁইজি।”
শিল্পকলা যেন সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রীয় জায়গাযয় মূল ভূমিকা পালন করতে পারে, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এগিয়ে যেতে পারে তা উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, “জাতীয় বাজেটের ৩ ভাগ যেন সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়।”
এরপর ফকির লালন সাঁইকে উপস্থাপন করেন শিল্পী অরূপ রাহী ও জহুরা ফকিরানী। তাদের গান ও তত্ত্বে লালন সাঁইজিকে স্মরণ করা হয়।
আগামিকাল ১৮ অক্টোবর (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে আয়োজন করা হবে সাধুমেলা “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
অনুষ্ঠানে দলীয় ও একক গান পরিবেশন করবেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নবীন, প্রবীন ও বিশিষ্ট বাউল শিল্পীবৃন্দ।