আন্তর্জাতিক : সম্প্রতি মেক্সিকোর চেম্বার অফ ডেপুটিজের প্রেসিডেন্ট মার্কোস গুতিয়েরেজ নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল চীন সফর করেছেন। বেইজিংয়ে পৌঁছানোর প্রথম দিনেই তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস জাদুঘর পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি কী কারণে বারবার দাঁড়িয়ে গভীর মনোযোগ সহকারে দেখছিলেন? মহাপ্রাচীর, নিষিদ্ধ নগর থেকে শুরু করে শায়ানসির স্থানীয় আইন প্রণয়ন সংযোগ কেন্দ্র পরিদর্শন পর্যন্ত-চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাঁর কী গভীর উপলব্ধি হয়েছে? উন্নয়নশীল বৃহৎ রাষ্ট্র ও গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান বাজার হিসেবে চীন ও মেক্সিকোর মধ্যে কৌশলগত সমন্বয় বাড়ানো উভয়পক্ষের জন্য কী ধরনের বাস্তব সুযোগ বয়ে আনবে?
সিএমজি’র ‘বিস্তারিত সাক্ষাৎকার’ প্রোগ্রামকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গুতিয়েরেজ জানান, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস জাদুঘর পরিদর্শন তাঁকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে, কারণ এটি একটি জাতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ দেয়-কীভাবে চীন একটি শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হয়েছে। তিনি সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ হয়েছেন লং মার্চের অংশটিতে, বিশেষ করে এর বর্ণনার শৈলী ও থ্রিডি প্রদর্শনীতে উপস্থাপনভঙ্গি দ্বারা। এছাড়া প্রযুক্তি উন্নয়নের শেষ অংশটিও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, যেমন চীনের মঙ্গলগ্রহে যান প্রেরণের সাফল্য ও পরমাণু শক্তি খাতে অগ্রগতি।
শায়ানসির একটি স্থানীয় আইন প্রণয়ন সংযোগ কেন্দ্র পরিদর্শনকালে গুতিয়েরেজ লক্ষ্য করেন যে, চীন ও মেক্সিকোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে: উভয় দেশই জনগণের কল্যাণে কাজ করে। তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক ব্যবস্থার কার্যক্রম বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ক্ষেত্রে মেক্সিকো ও চীনের আইন প্রণয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে আরও সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, এই সফরের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো চীন ও মেক্সিকোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ঐকমত্য দেখা। মেক্সিকো ও চীন গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার, এবং দূরত্ব সত্ত্বেও দু’দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। এই সফর কেবল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদাদের জন্যই নয়, এটি একটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করে: মেক্সিকো সর্বদা বহুপাক্ষিকতাকে সম্মান করবে এবং সম্মান ও সম্প্রীতির নীতির ভিত্তিতে বিশ্বের সকল দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করবে।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রস্তাবিত ‘মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যতের কমিউনিটি’ ধারণাটি অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক। এই ধারণা আলোচনা করে যে, দেশগুলো কীভাবে একসাথে বসবাস ও সহযোগিতা করতে পারে, কীভাবে অর্থনৈতিক, জনসংখ্যাগত ও ভৌগোলিক পার্থক্যগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে সেগুলোকে সংযোগের সেতুতে পরিণত করা যায়-যাতে সকল দেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বিশ্বের সকল মানুষ, বিশেষ করে চীন ও মেক্সিকোর জনগণ, সুখী ও উন্নত জীবন পাবে। মূলত এই লক্ষ্য অর্জনের একমাত্র উপায় হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া ও আন্তরিকতা।
সূত্র : স্বর্ণা-হাশিম-লিলি, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।