আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন মানের উৎপাদনশক্তি ক্রমাগতভাবে বিকশিত হচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ১৭ই মার্চ গত সোমবার চীনা কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ করার পর, মার্কিন টেপেস্ট্রি গ্রুপের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ইয়াং পাও ইয়ান সিএমজি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন “চীনের অর্থনৈতিক আকর্ষণ ও প্রাণশক্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশটিতে বিদেশী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নের জন্য নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে। ২০২৫ অর্থবছর পর্যন্ত বিগত তিন বছরে, চীনে আমাদের নতুন স্থাপিত দোকানের সংখ্যা ১০০টিতে দাঁড়িয়েছে।” ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-সহ বিদেশী সংবাদমাধ্যমগুলো মনে করে, চীনের ভোগ ও শিল্প উৎপাদনসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে ‘আশ্চর্যজনক শক্তিশালী লক্ষণ’ দেখা যাচ্ছে।

চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে, চীনের প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলোর বেশিরভাগই গত বছরের পুরো সময়ের তুলনায় ভালো ছিল। উদাহরণস্বরূপ, নির্ধারিত আকারের উপরে শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর অতিরিক্ত মূল্য বছরে ৫.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগের গোটা বছরের তুলনায় ০.১ শতাংশ পয়েন্ট বেশি; স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগে প্রবৃদ্ধির হার আগের গোটা বছরের তুলনায় ০.৯ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে দেখা যায় যে, গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিক থেকে পুনরুদ্ধারের ধারা অব্যাহত রয়েছে এবং সামষ্টিকভাবে স্থিতিশীল উন্নয়নের ধারা বজায় রেখেছে।
এদিকে, চীনের অর্থনীতি এখনও ‘নতুন ও উন্নত দিকে’ এগিয়ে চলেছে। প্রথম দুই মাসে, চীনের উচ্চ-প্রযুক্তি নির্মাণ শিল্পের প্রবৃদ্ধির হার আগের গোটা বছরের তুলনায় ০.২ শতাংশ পয়েন্ট বেশি ছিল এবং উচ্চ-প্রযুক্তি শিল্পে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধির হার মোট বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল। এতে বোঝা যায়, নতুন মানের উৎপাদনশক্তি ক্রমাগতভাবে বিকশিত হচ্ছে। সেই সাথে, ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণশিল্পের ক্রয় ব্যবস্থাপকদের সূচক এবং অ-নির্মাণ শিল্পের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক, উভয়েই আগের মাসের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে; ভোক্তা আস্থাসূচক টানা তিন মাস ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বছরের শুরুতে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ‘স্থিতিশীল’, ‘নতুন’ ও ‘ভালো’ বলে আখ্যায়িত করা যায়। এটি কেবল যে তার নিজের শক্তিশালী স্থিতিস্থাপকতার ওপর নির্ভর করে, তা নয়; বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির সম্মিলিত প্রয়োগের সাথে সম্পর্কিত। বিশেষ করে, গত বছর থেকে, চীনের শীর্ষ নেতারা দৃঢ়ভাবে সহায়ক নীতিমালার একটি প্যাকেজ ঘোষণা ও প্রয়োগ করেন, যা শিল্প উত্পাদনে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনে ও বাজারে লেনদেন বাড়াতে সহায়তা করে। অধিকন্তু, প্রথম দুই মাসের অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে ক্রমবর্ধমান প্রতিকূল বহিরাগত প্রভাবের মধ্যে, যা খুবই কঠিন ছিল। এই ধরনের অর্জন কেবল প্রথম প্রান্তিকে অর্থনীতির জন্য একটি ভালো ভিত্তি স্থাপন করেনি, বরং সারা বছরের অর্থনীতির জন্য একটি ভালো সূচনাও করেছে।

ঠিক এর ভিত্তিতেই বিদেশী গণমাধ্যমগুলো কিছু সময় ধরে চীনা অর্থনীতি সম্পর্কে ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছে। ব্রিটিশ ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’ বলেছে, চীনকে আরও আবিষ্কার করছে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এবং চীন নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে বিশাল ‘উদ্ভাবন ও সুযোগ’ আনতে পারে বলে তাঁরা বিশ্বাস করে।

এরই মধ্যে চীনা অর্থনীতি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে, বাহ্যিক পরিবেশ আরও জটিল ও কঠোর, এবং অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত ফ্যাক্টরগুলো বেড়েছে। তবে, চীনের বিশাল বাজার, একটি সম্পূর্ণ শিল্পব্যবস্থা, এবং সমৃদ্ধ মানবসম্পদসহ সংশ্লিষ্ট সুবিধাগুলো রয়েছে। সেই সাথে চাহিদা বাড়ছে, কাঠামোগত উন্নয়ন ঘটছে। স্টোরেজ ও প্রবৃদ্ধিসংক্রান্ত নীতিমালা অব্যাহতভাবে কাজে লাগানোর পাশাপাশি, চীনের অর্থনীতি আরও সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম। এই প্রক্রিয়ায় আরও নতুন নতুন সুযোগ খুঁজে বের করবে বিদেশী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো, এমনটা আশা করাই যায়।

সূত্র : ওয়াং হাইমান-আলিম-ছাই,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments