ব্যুরো প্রধান-রাজশাহী বিভাগ : নওগাঁর আত্রাইয়ে শুরু হয়েছে ঐতিহ্য বাহী শীতাতলার মেলা। দুইদিন ব্যাপী এ মেলা ১৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হয়েছে। প্রকৃত একদিনের মেলা হলেও মেলার দিন মঙ্গলবার সারাদিন মেলাটি চলে। পরের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পযন্ত চলবে বৌ মেলা । প্রতি বছর এ মেলা পৌষ মাসের শেষ ও মাঘের শুরুতে অনুষ্ঠিত হয়। মেলাটি অনুষ্ঠিত হয় উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের জামগ্রাম মাঠে একটি বটগাছের নীচে। এ মেলায় জনশ্রুতি রয়েছে কয়েক যুগ আগে নারায়ণ চন্দ্র তার স্ত্রী শীতাকে জামগ্রামের মাঠে বনবাস দিয়েছিলেন। আর এ বনবাসে শীতা আশ্রয় নিয়েছিলেন এ বটগাছের নীচে। এখানেই সেই প্রাচীন যুগের একটি ইন্দরা (কুয়া) স্মৃতি হিসেবে আজও বিদ্যমান রয়েছে। এ ইন্দারায় (কুয়া) জ্বলে নাকি শীতা স্নান করতেন। তারই স্মরণে হিন্দু সম্প্রদায় পরবতীতে এই জামগ্রামে মেলা বসিয়ে পূঁজা-অচনা মধ্যে দিয়ে এই দিনটিকে স্মরণ করে আসছে।
এক সময় মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে সীমাবদ্ধ নাই। এ মেলা এখন হিন্দু মুসলিম সকলেই অংশগ্রহন করেন। মেলাকে ঘিরে এখন আনন্দ উৎসবে পরিণত হয়েছে। জামাই মেয়ে ও আত্নীয়-স্বজন বন্ধু- বান্ধবদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। দিনটির জন্য সারাটি বছর অপেক্ষায় থাকেন উপজেলা বাসী। মেলায় বসে মাছের বিরাট মেলা। জামগ্রামের আশ-পাশের গ্রামের যারা বিয়ে করেছেন সে সব জামাই হচ্ছে ওই মেলার মূল ক্রেতা ও দশনাথী। মেলাকে ঘিরে এলাকার জামাইদের মধ্যে চলে নিরব প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতা হচ্ছে কোন জামাই সব চেয়ে বড় মাছটি কিনে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জামগ্রামের শীতাতলার মাছের মেলায় গিয়ে দেখা যায় এদৃশ্য। এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে লোকজনের আগমন হয়। বগুড়া, শেরপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর,ইশ্বরদী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা থেকে এ মেলা উপলক্ষে শতাধীক মাছ ব্যবসায়ীরা বাহারী মাছের পরসা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র,খেলনা, মিষ্টান্ন ইত্যাদির দোকান বসেছে।মাছের মেলায় সামদ্রিক, চিতল, বাঘার, আইড়, কাতলা, রুই, সিলভারকাপ,গলদাচিংড়ি মাছ সহ বিভিন্ন রকমের দেশিয় মাছ। জামগ্রাম শীতাতলার আয়োজকরা জানান, এ মেলাটি প্রথম অনুষ্ঠিত হতো খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে। প্রায় একশত বছর ধরে মেলাটি আয়োজন হয়ে আসছে।