দৈনন্দিন জীবনে তথ্যপ্রযুক্তিবিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বিজ্ঞানের ইতিহাস শুধুমাত্র বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারগুলোর নীরস বর্ণনা নয়। বিজ্ঞানের ইতিহাস হলো বিজ্ঞান ও মানুষের মধ্যকার একটি গল্প। এর সুচনা হয়েছিলো সভ্যাতার শুরুতে। তারপর যুগে যুগে বিভিন্ন পরিবর্তন ও উন্নয়নের মাধ্যমে আজকের যুগের এই অবস্থা। বিশেষ সামাজিক পরিস্থিতি, বিভিন্ন ধরণের সমস্যা, কোন ব্যক্তির নিরলস চেষ্টা বা অর্থনৈতিক ও সামজিক চাপের মাধ্যমেই কোন আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের সৃষ্টি হয়। সমাজের এই সকল উদ্ভাবন ব্যবহার করছে সমাজের প্রভাবশালী গোষ্ঠী। ফলে তারা হচ্ছে আরো প্রভাবশালী। আজকের এই বিজ্ঞান শুধুই কিছু প্রতিভাবান মানুষের অনুসন্ধান নয়। বিজ্ঞানের ইতিহাস সমাজের সকল মানুষের সফলতা, চেষ্টা ও ব্যার্থতার ইতিহাস। বিজ্ঞানের উদ্দেশ্য শুধু মুনাফা অর্জন নয়। কারণ তাই যদি হতো তাহলে শুধু লাভজনক যুদ্ধাস্ত্র আবিষ্কার হতো। মানুষের জন্য ওষুধ আবিষ্কার হতো না।

বর্তমান যুগের বিবেচনা কল্পে নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমাদের সময়কাল আর এখনকার সময়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। প্রাচীন যুগের সভ্যতা ও প্রযুক্তি হতে শুরু করে আজকের এই বর্তমান যুগের সভ্যতা ও প্রযুক্তির দিকে তাকালে আমরা এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারি। এ উন্নয়নশীল পরিবর্তনের পিছনে একমাত্র অবদান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির। পৃথিবীব্যাপী আজ শুধু বিজ্ঞানের ছোঁয়া। এমন কোন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না যার জীবনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছোঁয়া নেই। সমাজের কিছু কিছু স্তরে এখনো বিজ্ঞানের ছোঁয়া লাগেনি তাইতো সেখানে এখন পর্যন্ত উন্নতি প্রবেশ করতে পারে নি। তাই বলা যায় যে, মানব সভ্যতার বিকশিত রূপের মূলে রয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান আমাদেরকে এমন কি দেয়নি ভেবে দেখুন তো। ভেবে হয়তো বের করতে পারবেন না। একদিনে আমাদের এই বিলাসবহুল জীবন আসেনি। শত শত বিজ্ঞানীর হাজারো রাতের বলিদানের ফলাফল আজকের এই বিজ্ঞান। বিজ্ঞান শব্দের শব্দ গত একটা অর্থ রয়েছে আর তা হলো বিশেষ জ্ঞান।

আমাদের আশে-পাশের যে দুটি জগৎ অর্থাৎ জীব ও বস্তুজগৎ সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিজ্ঞান সম্মত অনুসন্ধান করে প্রাপ্ত জ্ঞান যা মানুষের জ্ঞানকে বিকশিত করে এবং সমাজের সভ্যতা ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটায় তাকে আমরা বিজ্ঞান বলে আখ্যায়িত করতে পারি। অপরদিকে বিজ্ঞানের জ্ঞানকে সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানে অথবা পূর্ববর্তী সমস্যার উন্নতি সাধনে বা প্রয়োজন এমন কিছু সৃষ্টির জন্যে সুনির্দিষ্ট কাজ করে উপযুক্ত সমাধান তৈরি করাই হলো প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির ছোঁয়া আজ পৃথিবীর ঘরে ঘরে। প্রতিনিয়ত আবিস্কার হচ্ছে কতো কার্যকরী যন্ত্র। যার ব্যবহারে মানুষের কাজ হচ্ছে আরো সহজ থেকে সহজ তর। আমাদের জীবনে প্রতিদিন নানা রকমের বিচিত্র ঘটনা ঘটে। আমরা এসব ঘটনা শুধু পর্যবেক্ষণ করে থাকি। আর কোন কিছু করার চেষ্টা করি না। কিন্তু সমাজে কিছু কিছু মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় যারা শুধু পর্যবেক্ষণ করেই থেমে থাকেন না। তারা এটা পর্যবেক্ষণ করে এবং সেই সাথে ভাবে এটা কেন হলো। প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য বিভিন্ন উপায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং গবেষণা করে। তারপর ঘটনাগুলো কেন এবং কীভাবে ঘটলো তার উত্তর খুঁজে বের করে। মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত নিবেদিতপ্রাণ এই সকল মানুষেরা নানা সমস্যা পর্যবেক্ষণ করে এর সমাধানের চেষ্টা করে। এসব কৌতুহলী ও সৃজনশীল ব্যক্তিবর্গ যারা সমস্যা পর্যবেক্ষণ করে সমাধানের চেষ্টা করে তাদের আমরা বিজ্ঞানী বলি। তাই বিজ্ঞানের বা বিজ্ঞানীর যত আবিষ্কার তার মুল লক্ষ্যই হলো মানব কল্যাণ। তাই বিজ্ঞানীরা নানা আবিষ্কার ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধন করে পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করেছে।বিজ্ঞানের  উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, কৃষিক্ষেত্র বিজ্ঞানের অবদান এতটাই যে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না প্রাচীন কাল থেকে মানুষ কৃষির সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। কিন্তু সেই প্রাচীনকালের কৃষি পদ্ধতির দিকে তাকালে আর বর্তমান কৃষি পদ্ধতির দিকে তাকালে বোঝা যায় এর মাঝে কতটা অমিল রয়েছে।

বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত হচ্ছে আধুনিক সকল যন্ত্রপাতি, কীটনাশক, রাসায়নিক সার, উন্নত মানের ফলনশীল বীজ এবং সেই সাথে চাষাবাদের উন্নত পদ্ধতি যা স্বল্প জমিতে প্রচুর পরিমাণ উৎপাদন দিচ্ছে। আর এই বিষয়টা মানব জাতির জন্য একান্ত প্রয়োজন। কারণ জনসংখ্যার কারণে দিন যত যাচ্ছে তত জমি সংকট হচ্ছে। তাই স্বল্প জমিতে প্রচুর পরিমাণ উৎপাদন না হলে মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হবে। বিজ্ঞানের জ্ঞান এতটাই কার্যকরী যে মরুভূমির মতো বালুকাময় পরিবেশেও চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। সম্ভব হচ্ছে অনুর্বর জমিকে উর্বর করে তোলা। সম্ভব হচ্ছে লোনা মাটিতে লোনা মাটির উপযোগী ফসল উৎপাদন করা। সম্ভব হচ্ছে একই সাথে ফসল ও মাছের চাষ করা। পানিযুক্ত পরিবেশে ফসল চাষের সাথে সাথে সেই পানির ভিতরে আবার মাছের চাষ ও হচ্ছে। বন্যা ও খরা প্রতিরোধের জন্য ধান আবিষ্কার, পোকা প্রতিরোধী বেগুন আবিষ্কার এসব কিছু সম্ভব হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফলে।বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় শিল্পক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ শিল্পবিপ্লব হয়েছে। বিজ্ঞানের হাত ধরেই আঠারো শতকের মধ্যে খানে শিল্প বিপ্লব হয়েছিলো। বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক অমূল্য রত্ন। প্রাচীনকালে শিল্পকারখানা গুলোতে মানুষ নিজ হাতে কাজ করলেও এখনকার শিল্পকারখানাগুলোতে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র কাজ করছে। ফলে কম শ্রমিক কম শ্রমে বেশি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। শিল্প কারখানার সব যন্ত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদান। মানব জাতির উন্নয়নে শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। শিক্ষা ছাড়া একটি সমাজ যেমন দুর্বল ঠিক তেমনি নির্বোধ ও বোকা। শিক্ষার জন্য চাই উপযুক্ত বই, খাতা, কলম এবং সেই সাথে প্রয়োজনীয় আরো অনেক কিছু যার অধিকাংশই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আবিষ্কার। আর এসব শিক্ষা অবদান ছাড়া শিক্ষা বিকশিত হবে না। এছাড়া বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যবহৃত যন্ত্র হচ্ছে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ। আর সেইসাথে লাগছে কার্যকরী ইন্টারনেট সংযোগ। আর এই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট বিজ্ঞানের বৃহৎ সাফল্য বললে ভুল হবে না।

পড়াশোনা কে আরও সহজ আর সমৃদ্ধ করতেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ গুরুত্বপূর্ন। দেশি- বিদেশি বিভিন্ন বই আর এই সকল বইয়ের অনুবাদ এছাড়া সঠিক পরামর্শ আরো সহজলভ্য করেছে এই ইন্টারনেট। তাই বলা যায় যে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মূল্য অপরিসীম। আর বিজ্ঞানের এত এত প্রধান প্রধান শাখা রয়েছে যা শিক্ষার প্রধান প্রধান বিষয়। আর অনেক জ্ঞানের বিষয় রয়েছে যা নেটে খুব সহজে পাওয়া যায়। কোন কিছু অনুবাদ করতে হলে সহজেই নেটের মাধ্যমে করা যায়।প্রতিদিন ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। আরামদায়ক ও দ্রুতগতিসম্পন্ন কাজ এনে দিয়েছে বিজ্ঞান। সেইসাথে মানুষকে দিয়েছে বিলাসবহুল সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ভরা জীবন। বিদ্যুৎ কে কেন্দ্র করে এত এত যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে যে এগুলো তালিকাবদ্ধ করা সম্ভব নয়। প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত দ্রব্যসামগ্রী যেমন-লাইট, ফ্যান, মোবাইল, সার্কিট ব্রেকার ইত্যাদি ছাড়াও আরো কত কিছু যেগুলো ছাড়া আমরা এক মুহুর্ত চলতে পারি। আর এতো সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিজ্ঞানের কারনেই সম্ভব হলো। সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সেবার মাধ্যমে আজকাল অনেক জটিল ও দূরারোগ্য রোগ থেকে মানুষ পরিত্রাণ পাচ্ছে। যক্ষ্মা, কলেরাকে এক সময় মরণব্যাধি হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো আর এখন তা মানুষের হাতের নাগালে। আগে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন- চোখ, কিডনি ইত্যাদির প্রতিস্থাপন সম্ভব না হলেও এখন সম্ভব হচ্ছে। মূত্রথলি, পিত্তথলী প্রভৃতি হতে পাথর অপসারণ আগে সম্ভব না হলেও এখন হচ্ছে। ক্যান্সার নামক ভয়ানক মরণব্যাধির বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সম্ভবপর হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার এর মাধ্যমে। এছাড়া ফার্মাসিতে এত এত ওষুধ রয়েছে যার অধিকাংশই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিরই উপহার। আধুনিক সব চিকিৎসা যন্ত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কারণেই পাওয়া গেছে। তাছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আবহাওয়া।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পরশে বিজ্ঞানীগণ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে আমরা যেমন বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখতে পাচ্ছি ঠিক তেমনি আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও দেখতে পাচ্ছি। আনুমানিক ৭-৮ দিন পূর্বেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায় বলে দাবী করেন বিজ্ঞানীরা। ফলে আমরা যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আগেই সচেতন হতে পারছি। আবহাওয়া অধিদপ্তর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আবহাওয়ার উপাত্ত সংগ্রহ করে অর্থাৎ রাডারের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য নিয়ে আলোচনা করে আগাম সতর্কীকরণের বা পুর্বাভাস দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। আজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুবিধায় আমরা কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে যেকোন জায়গার আবহাওয়ার সকল তথ্য পাচ্ছি।এমনকি নগর সভ্যতার বিকাশে বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নগর সভ্যতার অধিকাংশ বিষয়েই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছোয়া স্পষ্ট। নগর সভ্যতা মানুষের জীবনে নিয়ে এসেছে সুখ, স্বাচ্ছন্দ ও জীবনকে করে দিয়েছে সহজ থেকে আরো সহজতর। প্রকৃতির বিভিন্ন রহস্য উদঘাটন করছে বিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা। মানুষের কৌতূহলী মন পৃথিবীকে নিয়ে গবেষণা করতে করতেই মহাশূন্যে পা দিয়েছে। যে চাঁদ ছিলো শুধু কল্পনা তা এখন বাস্তবতা। চাঁদে এখন পৃথিবীর মানুষের পতাকা উরছে। বিজ্ঞানের কারণেই আমরা এখন মঙ্গলগ্রহে মানব জাতির বসবাস উপযোগী পরিবেশ খুঁজতে গবেষণা করছি। তাছাড়া মানুষ মহাশূন্যে অনেক কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়েছে এবং সেই সাথে রাবোট ও অন্যান্য আধুনিক ইলেকট্রিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে যার মাধ্যমে মহাশূন্য সম্পর্কে সব সত্য কথা জানা যায়। তারা ভাবছে কিভাবে অ্যাস্ট্রোনমি শাস্ত্রকে সমৃদ্ধ করা যায়। নিচের চিত্রের মাধ্যমে দেখুন মানুষ কিভাবে মহাশুন্য পরিভ্রমণ করছে। যদিও বিজ্ঞানের অন্যতম লক্ষ্য হলো মানুষের কল্যাণে কাজ করা তবুও এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। মানুষের মন মানসিকতা ও ব্যবহারের উপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপকারিতা ও অপকারিতা বোঝা যায়

কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদানে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের আবিষ্কারের ফলেই বেকারত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে। আর এসব কলকারখানার দুষিত বর্জ্য পরিবেশকে করে দুষিত। ফলে পৃথিবীতে সকল জীব হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু ফলে অকালে বন্যা, ঝড়, ঘুর্ণিঝড় বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রীন হাউজ গ্যাস বৃদ্ধির কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে হিমালয়ের বরফ গলে সমুদ্রে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে অকালে তলিয়ে যাচ্ছে স্থল ভাগের নিম্না অঞ্চলগুলো।আর এসব হচ্ছে বিভিন্ন দেশের কলকারখানা, যানবাহন ইতাদির কারণে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেও এসব দেশকে পরিবেশ দুষনের হার বাড়ানো থেকে আটকানো যাচ্ছে না। ফলে গলে যাচ্ছে দুই মেরু অঞ্চলের বরফ। বিজ্ঞানের স্পষ্ট অপব্যবহার দেখতে চাইলে আপনি তাকাতে পারেন ২য় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ রুপের দিকে। প্রতিটি বিস্ফোরণ কত মানুষের প্রাণ নিয়েছে। বিজ্ঞানের এই অপব্যবহারকে রোধ করতে পারলে আমরা বিজ্ঞানের সমস্ত কল্যাণ ভোগ করতে পারব। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কারণে মানব সভ্যতা শ্রেষ্ঠ সময় পার করেছে। প্রাচীনকালে যেসব প্রযুক্তির কথা মানুষ ভাবতে পারতো না আজ সেসব প্রযুক্তি মানুষের জীবনের সকল সমস্যা দূর করেছে। ভবিষ্যতে ঠিক একই রকমভাবে এমন কিছু প্রযুক্তি আসবে যা হয়তো বদলে দিবে আমাদের জীবন।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের দিকে বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির মিলিত উন্নয়নে মানুষের জীবনযাত্রা হবে অনেক বেশি বিলাস বহুল। এবং সকল কাজ হবে সহজ থেকে সহজতর। তবে সেটা দক্ষ লোকদের জন্য। সময়ের পরিবর্তনে মানুষের জীবন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একে অপরের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে জড়িয়ে গেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ যা সর্বদায় মানব কল্যাণে নিয়োজিত। দৈনন্দিন জীবনের প্রত্যেকটি কাজেই বিজ্ঞানের অবদান আছে। মানুষের জীবনে বিজ্ঞানের ও প্রযুক্তির এত ব্যবহারকে ইতিবাচক দিকেই রাখতে হবে। বিজ্ঞানের আলোয় পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ আলোকিত তাই বাদবাকিদেরও আলোকিত করতে হবে। বিজ্ঞানের ক্ষতিকর দিক থেকে মানুষকে মুক্ত রাখার জন্য সকল ধরনের বিজ্ঞানের অপব্যবহার থেকে বিজ্ঞানকে সরিয়ে রাখতে হবে। আর এভাবেই মানব কল্যাণ সম্ভব।

লেখক : রায়হান আহমেদ তপাদার, গবেষক ও কলামিস্ট ।

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments