দক্ষিণ এশিয়ার নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ কমলা ভাসিন
মো. মনজুরুল ইসলাম (মনজু) : দক্ষিণ এশিয়ায় জেন্ডার সমতার লক্ষ্যে কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ উপলক্ষ্যে ‘কমলা ভাসিন পুরস্কার’ বিষয়ক একটি অবহিতকরণ প্রসঙ্গে কমলা ভাসিন পুরস্কার কমিটির উদ্যোগে আজ ১৫ মে (বুধবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত মানবাধিকারকর্মী এবং সাংগাত-এর উপদেষ্টা খুশী কবির, পুরস্কার কমিটির সদস্য এবং আজাদ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী দোলন গাঙ্গুলী এবং সাংগাত বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি কোর গ্রুপের সদস্য এডভোকেট নাহিদ সুলতানা।
খুশী কবির তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য এবং কমলা ভাসিন-এর অবদান সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কমলা ভাসিন ছিলেন একাধারে শান্তি আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী, লেখক, কবি, শিশু সাহিত্যিক এবং সমাজবিজ্ঞানী। ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর দেহান্তের পর তাঁর জীবন উদযাপন এবং জেন্ডার সমতার উদ্দেশ্যে তাঁর কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আজাদ ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া এবং আই পার্টনার-ইন্ডিয়া সমবেতভাবে “কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ডস-ফর ড্রাইভিং জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যাক্রস সাউথ এশিয়া”-র সূচনা করে।
দোলন গাঙ্গুলী তাঁর বক্তব্যে জানান যে, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদনকারী আবেদন করলেও বাংলাদেশ থেকে ২০২৩ সালে কোনও আবেদন জমা পড়েনি। যেহেতু কমলা ভাসিন সত্যিকার অর্থেই নিজেকে একজন দক্ষিণ এশীয় ভাবতেন, তাই এই পুরস্কারের দক্ষিণ এশীয় প্রকৃতি বজায় রাখতে বাংলাদেশ থেকেও অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী যেকোন ব্যাক্তি এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারেন।
দোলন গাঙ্গুলী উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে পুরস্কারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে আবেদন জানান, যেন এই পুরস্কারের খবর বাংলাদেশের গ্রামে, শহরে সর্বত্র ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেন এবং যোগ্য ব্যক্তিবর্গদের আবেদনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
এই পুরস্কারের বিচারকমন্ডলী হিসেবে আছেন দক্ষিণ এশিয়ার স্বনামখ্যাত নারী অধিকার ও মানবাধিকার কর্মী, সমাজসেবী, সাংবাদিকসহ প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গ। প্রতি বছর দু’টি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হবে, (১) যে নারী (সিস অথবা ট্রান্স) প্রথা-বহির্ভূত বা অপ্রচলিত পেশায় সফলভাবে কর্মরত (২) যে পুরুষ (সিস অথবা ট্রান্স) জেন্ডার সাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করেন।
প্রতিটি পুরস্কারমূল্য ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ টাকা। অর্থমূল্য ছাড়াও পুরস্কৃত ব্যক্তি দক্ষিণ এশিয়ার সমাজকর্মীদের নেটওয়ার্কের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
উল্লেখ্য যে, পুরস্কারের আবেদনের ঘোষণা হয় ৮ মার্চ এবং আবেদনের শেষ তারিখ ৭ জুন, ২০২৪। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ৩০ নভেম্বর, ভারতের নয়াদিল্লির হ্যাবিট্যাট সেন্টারে।
উল্লেখ্য যে, দোলন গাঙ্গুলী গত ১৪ মে (মঙ্গলবার) বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে কমলা ভাসিন পুরস্কার বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথেও একটি অবহিতকরণ সভা করেন যেখানে মহিলা পরিষদ, নারীপক্ষ, একশন এইড, অক্সফাম, বাদাবন সঙ্ঘ, জাগো ফাউডেশন, সাংগাত বাংলাদেশ, ক্যাম্পি, ডিয়াকোনিয়া, অস্তিত্ব বাংলাদেশ, কর্মজীবী নারী, বন্ধু ফাউন্ডেশনসহ আরও কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার আন্দোলনের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এই পুরস্কারের বিষয়ে বিশদ জানতে দেখুন: https://kamlabhasinawards.org/