“তৃতীয় পর্ব: হৃদয়ের আনচান অনুভূতি”
দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আবির ধীরে ধীরে নতুন স্কুলের পরিবেশে অভ্যস্ত হয়ে উঠছিল। সে নতুন বন্ধু পেয়েছিল—রিয়াদ, শুভ আর নাফিস। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছিল, একটা জিনিস সে নিজেও বুঝতে পারছিল না—তানিশার প্রতি তার অনুভূতি দিন দিন বদলে যাচ্ছে।
স্কুলের বিশাল মাঠে বসে আবির আর তার বন্ধুরা ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করছিল। নাফিস বলল, “দোস্ত, আমাদের টিমে আসবি? তোর ব্যাটিং নাকি ভালো!”
আবির হেসে বলল, “হ্যাঁ, দেখি! একদিন খেলি তোমাদের সাথে!”
এমন সময় পাশ থেকে একটা পরিচিত কণ্ঠ ভেসে এল—”আবির, তুমি কি ক্রিকেট পছন্দ করো?”
তানিশা!
আবির চমকে গেল, যেন তার বুকের ভেতর কেমন একটা শিহরণ বয়ে গেল। তানিশা একটা নীল রঙের চুড়িদার পরেছিল, হালকা বাতাসে তার বেণী দুলছিল।
আবির একটু হেসে বলল, “হ্যাঁ, মাঝে মাঝে খেলি। তুমি খেলো?”
তানিশা মাথা নাড়ল, “না, কিন্তু দেখতে ভালো লাগে!”
আবির কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তখনই রিয়াদ মজা করে বলল, “ওহহো! তাহলে তো আবির খেললে তানিশা সবার আগে গ্যালারিতে থাকবে!”
তানিশা লজ্জায় একটু মুখ ঘুরিয়ে নিল, আর আবিরের কানে গরম লাল হয়ে উঠল। বন্ধুরা হেসে উঠল, কিন্তু আবিরের মনে তখন অন্য কিছু চলছিল।
সে ভাবছিল, “আমি কেন ওর সামনে এত নার্ভাস হয়ে যাই? কেন ওর হাসি দেখলেই মনে হয়, পুরো দিনটাই সুন্দর হয়ে গেল?”
এই অনুভূতিগুলো সে আগে কখনো অনুভব করেনি। হয়তো এটা বন্ধুত্ব? নাকি অন্য কিছু?
কিন্তু সে জানত না, এই ছোট্ট অনুভূতিগুলোই একদিন তার জীবনে বিশাল একটা অধ্যায়ের শুরু করবে
চতুর্থ পর্ব: হৃদয়ের কথা কি বলা যায়?
আবির নিজেকে সামলাতে পারছিল না। গত কয়েকদিন ধরে তার মনের মধ্যে এক অদ্ভুত পরিবর্তন হচ্ছে। ক্লাসে বসে থাকলেও সে তানিশার দিকে তাকিয়ে থাকে, তানিশা কিছু বললেই তার বুকের মধ্যে এক অজানা শিহরণ খেলে যায়।
কিন্তু সে নিজেকেই বোঝাতে পারছিল না—”এটা কি বন্ধুত্ব, নাকি কিছু অন্যরকম?”
একদিন স্কুল ছুটির পর, আবির আর তানিশা একসাথে গেট দিয়ে বের হচ্ছিল। রাস্তার পাশে শিমুল গাছের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা এক ফুল হঠাৎ বাতাসে উড়ে এসে তানিশার কাঁধে পড়ল।
তানিশা ফুলটা হাতে নিয়ে বলল, “দেখো না, এটা কি সুন্দর, তাই না?”
আবির কিছুক্ষণ চুপ করে রইল, তারপর আস্তে করে বলল, “হ্যাঁ, খুব সুন্দর…”
তানিশা তখন ফুলটা হাতে নিয়ে খেলছিল, কিন্তু আবিরের চোখ ছিল একদম তার মুখের ওপর।
এমন সময় হঠাৎ তানিশা বলল, “আবির, তুমি জানো? আমি মনে করি, কিছু অনুভূতি বলার দরকার হয় না, শুধু অনুভব করলেই হয়!”
আবির থমকে গেল। সে কিছু বলবে কি বলবে না, বুঝতে পারছিল না।
তার কি এখনই বলা উচিত?
নাকি সত্যিই কিছু অনুভূতি শুধু মনে লুকিয়ে রাখলেই ভালো?
(লেখক পারভেজ এর পরবর্তী লেখা পড়তে চোখ রাখুন বুলেটিন নিউজ ও ভোরের পাতা পত্রিকায়)
লেখক পরিচিতি- মোঃ পারভেজ ইসলাম (কলম নাম: অনন্ত) ২০০৫ সালের ৮ই জুন চুয়াডাঙ্গা জেলার বড় শলুয়া গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মোঃ রাসেল মিয়া এবং মাতার নাম পারুলা খাতুন। বর্তমানে তিনি বড়শালুয়া নিউ মডেল ডিগ্রী কলেজে অধ্যয়নরত। ছোটবেলা থেকেই কবিতা ও সাহিত্যের প্রতি তার গভীর অনুরাগ। তার লেখায় প্রেম, প্রকৃতি, জীবন ও আবেগের এক অপূর্ব সমন্বয় ফুটে ওঠে, যা পাঠকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।