আন্তর্জাতিক সংবাদ

চীন-রাশিয়া সম্পর্ক শান্তভাবে সামনে এগিয়ে যাবে : পুতিন-সি ফোনালাপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত সোমবার বিকেলে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফোনে কথা বলেন।

এ সময় সি চিন পিং বলেন, চীনা বসন্ত উৎসবের প্রাক্কালে, প্রেসিডেন্টের পুতিনের সঙ্গে ভিডিও-বৈঠকে, বছরব্যাপী চীন-রাশিয়া সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা ও নির্দেশনা ঠিক করা হয় এবং বেশ কয়েকটি প্রধান আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে দু’দেশের সমন্বয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়। দুই দেশের বিভাগগুলো, তাদের ঐকমত্য অনুসারে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের প্রতিরোধ যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী ও বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনের কার্যক্রম পরিচালনা করা।

সি বলেন, ইতিহাস ও বাস্তবতা অনুসারে, চীন ও রাশিয়া পরস্পরের ভালো প্রতিবেশী, তারা সুখ-দুঃখ শেয়ার করে একে অপরকে সমর্থন করে। দু’দেশ অভিন্ন উন্নয়ন-পথে একে অপরের প্রকৃত বন্ধু। চীন-রাশিয়া সম্পর্কের একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চালিকাশক্তি ও অনন্য কৌশলগত মূল্য রয়েছে। এগুলো কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে পরিচালিত নয় এবং কোনো তৃতীয় পক্ষ দ্বারা প্রভাবিতও নয়। চীন ও রাশিয়ার উন্নয়ন-কৌশল ও বৈদেশিক নীতি দীর্ঘমেয়াদী। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির যত পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, চীন-রাশিয়া সম্পর্ক শান্তভাবে সামনে এগিয়ে যাবে, একে অপরের উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনে অবদান রাখবে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে স্থিতিশীলতা ও ইতিবাচক শক্তি সঞ্চার করবে।

জবাবে পুতিন বলেন, রাশিয়া চীনের সাথে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং নতুন বছরে চীনের সাথে উচ্চ-স্তরের বিনিময় বজায় রাখার, বাস্তব সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং বিশ্বের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী এবং জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনা জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধে বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী যৌথভাবে উদযাপনের জন্য উন্মুখ।

তিনি বলেন, চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। এটি কোনোভাবেই একটি স্থবির পদক্ষেপ নয় এবং কোনো অস্থায়ী ঘটনা দ্বারা প্রভাবিত হবে না বা বাইরের হস্তক্ষেপ মুক্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখা নতুন যুগে দুই দেশের সমন্বয়ের ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বের চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং এটি একটি ইতিবাচক সংকেতও দেবে যে, রাশিয়া ও চীন আন্তর্জাতিক বিষয়ে স্থিতিশীল ভূমিকা পালন করে।

পুতিন রাশিয়া-মার্কিন যোগাযোগের সর্বশেষ উন্নয়ন এবং ইউক্রেনীয় সংকটে রাশিয়ার নীতিগত অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করেন এবং বলেন যে, মস্কো রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মূল কারণগুলো দূর করতে এবং একটি টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী শান্তি পরিকল্পনায় পৌঁছাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, ইউক্রেন সংকট শুরু থেকেই তিনি তা সমাধানের জন্য “চারটি পদক্ষেপ”-এর মতো মৌলিক প্রস্তাবনা তুলে ধরেছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে, চীন, ব্রাজিল ও বিশ্বের দক্ষিণের কিছু দেশ যৌথভাবে ইউক্রেন সংকটের ওপর “শান্তির বন্ধু” গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করে, যাতে সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের জন্য একটি পরিবেশ ও পরিস্থিতি তৈরি করা যায়। সংকট সমাধানে রাশিয়া এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষের ইতিবাচক প্রচেষ্টাকে চীন স্বাগত জানায়। উভয় নেতা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখতেও সম্মত হয়েছেন।

সূত্র : স্বর্ণা-আলিম-লিলি, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।

image_print
Spread the love
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments