আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টির সভাপতি হুন সেন গত (বৃহস্পতিবার) বিকেলে নমপেনে বৈঠক করেছেন।
বৈঠককালে সি বলেন, চীন ও কম্বোডিয়া সুপ্রতিবেশী দেশ ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দু’দেশের অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠন জনগণের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। বর্তমানে দু’দেশ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে, তাই জনগণের কল্যাণকে কেন্দ্র করে নিজ নিজ আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় সুদৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি এবং দু’দেশ যৌথভাবে বিশ্বের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল শক্তির ভূমিকা পালন করবে।
সি জোর দিয়ে বলেন, কম্বোডিয়ার জাতীয় পুনরুত্থানের পথ আরো বিস্তৃত হবে এবং চীন দেশটির স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পিপলস পার্টিকে সমর্থন দেবে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে কম্বোডিয়ার আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে সহায়তা দেবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়সহ বিভিন্ন সংলাপ ব্যবস্থায় বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করা উচিত দু’দেশের। কম্বোডিয়ার ‘শিল্প উন্নয়ন করিডোর’, ‘মাছ ও চাল করিডোর’ নির্মাণে সাহায্য করবে চীন।
সি আরো বলেন, ইতিহাস থেকে প্রমাণিত হয়েছে, বিশ্বের বহুমেরুকরণ, অর্থনীতির বিশ্বায়ন, সভ্যতার বৈচিত্র্যে বাধা দেওয়া যায় না, একতরফাবাদ ও আধিপত্যবাদ কেউ গ্রহণ করবে না। বাণিজ্য-যুদ্ধ বহুপক্ষীয় বাণিজ্যিক ব্যবস্থার ক্ষতিকর করেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে দিয়েছে। তাই বিভিন্ন দেশের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নের অধিকার নিজের হাতে ধরে রাখতে হবে। পারস্পরিক সম্মান, উপকারিতা ও অভিন্ন উন্নয়নের ভিত্তিতে মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠন করা জরুরি। এশিয়ার সম্পূর্ণ পুনরুত্থানের নতুন আরম্ভে চীন আন্তরিকভাবে বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা করবে, যাতে চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের সাফল্যে আরো বেশি দেশ উপকৃত হয় এবং এশিয়ার আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া দ্রুত করা যায়।
হুন সেন বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্ট সি’র সফর কম্বোডিয়ার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। সি এবং সিপিসি’র নেতৃত্বে গত বছরে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তির উদ্ভাবনে আকর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কম্বোডিয়ার দৃঢ় সমর্থক ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার চীন। কম্বোডিয়ার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে, জনগণের গণজীবিকার পরিবর্তনে চীনের অবদান বেশি, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় দেশটি।
হুন বলেন, তাঁর দেশ দৃঢ়ভাবে একচীন নীতি অনুসরণ করবে এবং তাইওয়ান ইস্যু, সিনচিয়াং ইস্যু ও সিচাং ইস্যুতে চীনের মতাধিষ্ঠানের সমর্থন করবে। চীনের সাথে কৌশলগত নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করবে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ করবে, আরো বেশি চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পুঁজি বিনিয়োগ স্বাগত জানায়। চলমান বাণিজ্য-যুদ্ধ, শুল্ক-যুদ্ধ বিভন্ন দেশের বৈধ স্বার্থ লঙ্ঘন করেছে, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে, তাই বিভিন্ন ঝুঁকির মোকাবিলায় চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক কম্বোডিয়া।
সূত্র : সুবর্ণা-হাশিম-প্রেমা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।