এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ-এর নারী কমিটি ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ-এর যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন ও র্যালি
মো. মনজুরুল ইসলাম (মনজু) : বৈষম্য-দারিদ্রের অবসান ও মানবাধকিার সুরক্ষাসহ উন্নয়নরে গতি বৃদ্ধিতে নারীর জন্য র্পযাপ্ত বিনিয়োগ আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আজ ৮ মার্চ এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ-এর নারী কমিটি ও বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)-এর যৌথ উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তারা বলেন, উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদশে আসীন হলেও পিছিয়ে আছে নারী। অথচ বাংলাদশেরে অগ্রযাত্রায় নারীর শ্রমশক্তি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। এই শ্রমশক্তরি উপর ভর করেই বাংলাদশ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে বাংলাদশে আসীন হলেও বেশ কিছুক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে, তার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক নারী শ্রমিকদের অর্ন্তভূক্ত করে শ্রম আইন সংশোধন ও যুগোপযোগী করা।
বক্তারা আরও বলেন, পোশাক খাতসহ সব খাতে নারী শ্রমিকদের মৃাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা ও সন্তানের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখা জরুরী। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, মজুরি বৈষম্য, ন্যায্য মজুরি, সময়মতো মজুরি প্রদান, চাকুরির অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে। যৌন হয়রানি ও সহিংসতা রোধে ২০০৯-এর নীতিমালা ও শ্রম আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে কারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে তদারকি ও পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে, নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য অফিস পরিবহণ ও শ্রমিক সংগঠনে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। নারী শ্রমিকদের শ্রম আইন ও তাদের অধিকার বিষয়ে সচেতনকতামূলক প্রচারণা চালানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
রেহানা আক্তার ডলি বলেনÑ পোশাক কারখানায় যারা শ্রমিক, তাদের অধিকাংশই নারী, আর যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তারা বেশীরভাগই পুরুষ, ফলে নারী শ্রমিকরা নানা ধরনের হয়রানি ও প্রতিকূল পরিবেশের মুখে পড়েন। এছাড়া নারীকে পোশাক কারখানায় নারী হিসেবে নয়, সস্তা শ্রমিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন শক্তিশালী করা দরকার সেই সাথে পোশাক শিল্পে কর্মরত নারী শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকের ন্যায্য অধীকার আদায়ে কারখানা মালিক/সরবরাহকারীদের পাশাপাশি ব্রান্ড/বায়ারদেরকেও দায়বদ্ধ আওতায় অনতে হবে ।
এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ-এর জাতীয় কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এসডজি ৫ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা অর্জন করতে হলে দরিদ্র নারী ও মেয়েদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনসহ তাদের সকল অধীকার বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই । ২০৩০ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা অর্জনের জন্য র্বতমান বিশ্ব সঠিক পথে এগোচ্ছে না, যার প্রধান কারণ হচ্ছে বাজেট ঘাটতি। জেন্ডার সমতা অর্জনের লক্ষ্যে সারা বিশ্বে বাৎসরিক ৩৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা আরও নাজুক, এখানে বাজেট ঘাটতি তো থাকেই, পাশাপাশি যতটুকু বরাদ্দ থাকে তা যথাযথভাবে ব্যয় হয় না। পাশাপাশি ব্যয় কতটা কার্যকরভাবে হলো তারও কোনো মনিটরিং নাই। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীদের জন্য বিনিয়োগ বাড়িয়ে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারসহ ব্যক্তি পরিবার, সমাজ ও সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, নারীর আর্থিক ক্ষমতায়নের পাশাপাশি আরও অন্যান্য ক্ষমতায়নের বিষয়ে দৃষ্টিপাত করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা ও কর্মসংস্থান নারী আর্থিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে খুবই তাৎপর্যপূণ। নারীর নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য, স¦নির্ভর হওয়ার জন্য সম্পত্তি প্রাপ্তিতেও সমান-অধিকার থাকা আবশ্যক।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি অরিফুর রহমান, নারী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক নেত্রী সুমাইয়া ইসলাম, জাহানারা, সাথি আক্তার, রাশিদা আক্তার, নাজমা আক্তার প্রমুখ।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন এশিয়া ফ্লোর ওয়েজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ-এর নারী কমিটির সদস্য রোজিনা আক্তর সুমি।