“অভিভাবকের কাছে সন্তানের শেষ চিঠি”
প্রিয় অভিভাবক,
আসসালামু আলাইকুম। এটাই আমার শেষ চিঠি, আর বিগত সময় তোমাদের সাথে আমার দেখা হয়েছিল! ওটাই ছিল শেষ দেখা। আমি তোমাদের সাথে বেয়াদবি করেছি প্লিজ মাফ করে দিবেন, যদি সরেষ দানা পরিমাণ উপকার করে থাকি তবে তার জন্য আমার দাবি আমার জন্য একটু দোয়া করবা। এটুকুই চাওয়া। নাহ আমি মরি নাই, এটা সত্য যে মানুষ চিরন্তন বেঁচে থাকে না। কিন্তু আমি আমরণ বলার চেষ্টা করেছি এক ভাইয়ের গুণের সাথে আরেক ভাইয়ের গুণ নাও মিলতে পারে। সবারই স্বতন্ত্র প্রতিভা আছে, যা মানুষকে পরিশ্রম করতে উদ্দীপনা দেয়। আমি স্কুল শিক্ষায় হয়তো দক্ষ ছিলাম না, কিন্তু অন্য বিষয়ে আমারো ছিল প্রতিভা। শহরে লোকে আমায় বোকা বলে। আমি পরিশ্রম করার চেষ্টাও করেছি কিন্তু তোমাদের জন্য আমায় বিদায় দিতে হচ্ছে। তোমরা যেটা আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিলে তা আমি হজম কম করতে পেরেছি, আমার যে একটা স্বাধীনতা প্রয়োজন তা পাইনি; হ্যা আমি বিশ্বাস করি তোমরা আমার ভালই চেয়েছো। তোমরা আমাকে সময় দিতে পারনি, আমাকে বুঝতে পারনি। আমি বুজি তোমাদের কাছে পণ্যের মত ছিলাম অর্থাৎ পাইকারি পণ্য কিনলাম তা আবার বিক্রি করে একদিন লাভাংশ পাব। অথবা একটি দামড়ি পেলে বড় করলাম তা গাভী হয়ে বাছুর দিল, দুধ দিল বা গরু বিক্রি করে টাকা পাব। আমাকে এমনটা ভাবাটা ঠিক হয়নি, কোন সন্তানই চাইবে না তার জন্য তার অভিভাবকের মুখে চুনকালি পড়ুক। আমার একটা স্বপ্ন ছিল যা আমি লালন করতে পারিনি, সেই স্বপ্ন বৃক্ষে কোন ফল ধরেনি! আমার বিশ্বাস ছিল ফল ধরবে। আমরা মানুষ কিন্তু আমরা এটিই ভুলে যাই, ধৈর্য হারা হয়ে পড়ি! আমরা যন্ত্রে পরিণত হই। হ্যা এভাবেই নিভে যায় আমার মত কত নক্ষত্র। আমি ফেল করিনি, সত্যি করিনি! নম্বর কম পেয়েছি। ফেল কাকে বলে জানো? যখনি একটি মানুষ কুকর্ম করা শুরু করে তখনি সে ফেল হয়। পরীক্ষা হচ্ছে অদৃশ্য কিন্তু আমরা যেটা দেখি, যে পরীক্ষা দেই সেটার অনুভূতি হচ্ছে কারাগারে যেমন জুলুম। সূর্য কখনো রাগ করেনা, আমরাই বলে ফেলি সূর্য রাগ করেছে! আমরা কি সূর্যের কাছে গিয়েছি তার খোঁজ নিতে? তেমনি আমার ফিরে আসা অসম্ভব। তোমাদের প্রতি আমার দোয়া রইল, তোমরা আমার জন্য অনেক করেছো। বিদায় নেওয়াটা আমর উচিত হয়নি, আমিও জেদ করলাম! এই চিঠি হয়তো আমাকে নিয়ে তোমাদেরকে সুন্দর অনুভূতি ধারণা দিল, আমার মতে বিদায় না নিলে এমনটা হত না ল। তোমরা চোখ-কান খোলা রাখিও। নিষেধ করছি ভুল থেকে দূরে আসো।
ইতি,
রেজন